স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণ দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত ছবি

২৫ জানুয়ারি শনিবার বিকেল ৩টায় পুরানা পল্টন আজাদ সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

হাফেজ মাওলানা আহমদ আলীর সভাপতিত্বে ও মো. রেজাউল হকের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশের সভাপতি ডক্টর এ কে এম মাহবুবুর রহমান। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশের মহাসচিব উপাধ্যক্ষ মো. আবদুর রহমান, কুমিল্লার ইউনিভার্সিটি (অব.) প্রফেসর ড. হানিফ খাঁন। 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ১৯৭৮ সালে ৯ অর্ডিন্যান্স ২ এর ধারা মোতাবেক স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা সমূহকে ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ও বিশ্বে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সঙ্গে তাল মিলিয়ে NCTB কর্তৃক প্রকাশিত শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষার ন্যায় সকল শিক্ষা পাঠদান করে আসতেছে। দেশে প্রাথমিক শিক্ষার ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীগণ উপবৃত্তি ও ফিডিং এর ব্যবস্থা ছিল। যা অজানা কারণে ২০২২ সাল থেকে বন্ধ । ১৯৯৪ সালে রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকদের একই পরিপত্রে ৫০০ টাকা করে ভাতা প্রদান করা হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৩ সালে জাতীয়করণ হলেও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা পূর্বের ন্যায় বেতন বঞ্চিত রয়েছে। যারা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। 

এ সময় সংগঠনের মহাসচিব বলেন, মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা গত ২২ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ইরাব) এর সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় বলেন, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা সমস্যা জেনুইন। কিন্তু এই মুহূর্তে অনশন করা আমাদের বিব্রত করা ছাড়া আর কিছুই হবে না। মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টার কথার পরিপ্রেক্ষিতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশ বলতে চাই, আমরা সরকারকে বিব্রত করার জন্য কোনো কর্মসূচি দিতে চাই না। 

তিনি আরও বলেন, কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে, আমরা পর পর কয়েকবার আবেদন করেও শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়ের সাক্ষাৎ পাই নাই। আমরা চাই আপনি আগামী, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষক নেতৃবৃন্দদের নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগ থেকে একটি কমিটি গঠন করে এ যৌক্তিক দাবির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। আমরা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশ সরকার কে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। 

দাবিসমূহ: 

১) রেজি. প্রাপ্ত সকল মাদ্রাসা অনতিবিলম্বে জাতীয়করণ করার দাবি জানাচ্ছি।

২) স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা স্থাপন, স্বীকৃতি, পরিচালনা, জনবল কাঠামো এবং বেতন ভাতাদি সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২৫ জরুরি বাস্তবায়ন করতে হবে। 

৩) ২০২৩ সালের শিক্ষা মন্ত্রণালয় তত্ত্বাবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা টিম দিয়ে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জন্য যে গবেষণা ও সুপারিশ করা হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক। 

৪) ছাত্র-ছাত্রীদের অনতিবিলম্বে উপবৃত্তি চালু করতে হবে।

৫) শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০০৮ সালের মঞ্জুরীর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে।

৬) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় প্রাক ইবতেদায়ি স্তর চালু করতে হবে।

এমতাবস্থায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার আলোচ্য সমস্যা সমূহ সমাধানের জন্য ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশ, বর্তমান সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। ওই সমস্যাগুলো সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবো বলেও জানান তারা।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা মো. মোছলেহ উদ্দীন সহ-সভাপতি ইবতেদায়ি শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশ, মো. শহিদুল ইসলাম সাদ্দাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ইবতেদায়ি শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশ। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতৃবৃন্দ।