এখানে আপনার পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন দিন।

ঢাকা ১২ মার্চ ২০২৫ বুধবার

ব্রেকিং

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: বাংলাদেশর সকল জেলায় জেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পদে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহী প্রার্থীগণ নিউজ সাইটের যোগাযোগ অংশে প্রদত্ত ঠিকানায় (ফোন, ইমেইল) যোগাযোগ করুন।

বিশেষ প্রতিনিধি:

প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:২১

আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:২১

২২৫

শেয়ার:

সাংবাদিক লাঞ্ছনার ঘটনায় জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

সাতক্ষীরায় সাংবাদিক লাঞ্ছনার ঘটনায় জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

News

‘ডিসি মোস্তাক আহমেদকে চেনেন? ‘হু আর ইউ’ ইবলিস কোথাকার’- এমন অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে উচ্চস্বরে গালাগাল করলেন, সাতক্ষীরার সৎ ও খ্যাতিমান হিসেবে পরিচিত এবং সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জলকে। 

বুধবার সন্ধ্যার পর তার অফিসে ডেকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ক্ষ্যান্ত হননি প্রায় মারতে উদ্যত হন এবং তুই তোগারী শুরু করেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ। 

১৯ ডিসেম্বর বৃহষ্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের নেতৃবৃন্দ। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল জানান, জেলা প্রশাসকের আচমকা এ ধরনের আচরণে তিনি হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এক পর্যায়ে আমাকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল ডিসির রুম থেকে বাইরে নিয়ে যান।

ঘটনার পরপরই তিনি বিষয়টি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের জানালে তারা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন। একইসাথে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাতক্ষীরা আহ্ছানিয়া মিশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সকল সদসবৃন্দ। 

ঘটনা প্রসঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান আরও উজ্জল জানান, তিনি সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মিশনের ২৫ সদস্যের কার্যনির্বাহী এই কমিটির জেলা প্রশাসক ১৯৪৮ সাল থেকে পদাধিকার বলে সভাপতি। বর্তমান কমিটি চলতি বছরের ২২ মে এক সভার মাধ্যমে সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির অত্র কমিটির অনুমোদন করেন। এই কমিটির ঘাড়ে মহামান্য হাইকোর্টসহ সাতক্ষীরার আদালতে ৬টি মামলা চলমান রয়েছে। যারা এসব মামলা করেছেন তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বর্তমান জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ কমিটির সাথে কোনো ধরনের সভা না করে, নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের সাথেও কোনো পরামর্শ না করে গোপনে গত ৬ নভেম্বর চলমান কমিটি ভেঙে দিয়ে একটি এডহক কমিটি গঠন করেন। বিষয়টি জানবার পর মিশনের কার্যনির্বাহী কমিটির ২১ জন সদস্য বিষয়টি পূর্ণবিবেচনার দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে একটি আবেদন করেন।

এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে মিশনকে রক্ষার স্বার্থে তিনি (মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল) মহামান্য হাইকোর্টে একটি রীট পিটিশন দায়ের করেন। মহামান্য হাইকোটের একটি বেঞ্চ শুনানী শেষে গত ১৫ ডিসেম্বর উক্ত এডহক কমিটি স্ট্রে করে রুল জারী করেন। এমন প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল বুধবার ১০টায় ফোন দিয়ে আমাকে বলেন, সেকেন্ড হাফে জেলা প্রশাসক আপনাকে দেখা করতে বলেছেন। সেই মোতাবেক বেলা ৪ টার পরপরই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান তিনি। সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল জেলা প্রশাসকের রুমে বসতে বলেন। কিছুক্ষনের মধ্যে জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ রুমে প্রবেশ করতেই অকথ্য ভাষায় উচ্চস্বরে গালমন্দ শুরু করেন এবং বলেন মিশনের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে কাগজপত্র বুঝিয়ে দেননি কেন? এসব বলতে বলতে বলেন ‘ডিসি মোস্তাক আহমেদকে চেনেন? ‘হু আর ইউ’ ইবলিস কোথাকার’- তিনি রুমে অবস্থানরত অন্যদের দেখিয়ে বলেন, সাতক্ষীরায় কিছু ইবলিস আছে এ একটা ইবলিস। মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল তখন তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন এবং বলেন বিষয়টি আপনি ব্যক্তিগতভাবে নিচ্ছেন কেন? তাছাড়া এডহক কমিটি মহামান্য হাইকোর্ট স্টে করে দিয়েছেন। তখন তিনি আরও ক্ষিপ্র হয়ে ওঠেন এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এমন অবস্থায় সেখানে অবস্থানরত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল আমাকে বাইরে নিয়ে যান এবং চলে যেতে বলেন।

উল্লেখ্য, অবিভক্ত বাংলা ও আসামের শিক্ষা বিভাগের সহকারি পরিচালক, পীরে কামেল হজরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.) সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠার জন্য শহরের মুনজিতপুরে ১৯৫৪ সালে সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদকের নামে ৪২ শতক জমি ক্রয় করেন। গঠনতন্ত্রে মিশনের অধীনে মাদ্রাসা, এতিমখানা কাম-লিল্লাহ বোর্ডিং, হেফজখানা, লাইব্রেরী, দাতব্য চিকিৎসালয়সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করেন। মিশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে সে মোতাবেক মিশনের কমিটির মাধ্যমে অত্র প্রতিষ্ঠানগুলি পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু ২০১৫ সালের পর থেকে এসবের ব্যত্যয় ঘটিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি’র ছত্রছায়ায় রাষ্ট্রিয় ক্ষমতা অপব্যবহার করে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ কামাল শুভ্র, জেলা শ্রমিকলীগ নেতা তোহিদুর রহমান ডাবলু, আব্দুর রব ওয়ার্ছী, আব্দুল আজিজ ও আবু শোয়েব এবেল মিশনের নীতি আদর্শকে ভুলন্ঠিত করে, মিশনের ভবন নির্মান, মাদ্রাসা, এতিমখানা দখল করে ব্যাক্তিস্বার্থ হাসিল করছে। শুধু তাই না সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে মিশনের রেজিস্ট্রেশন পরিবর্তন করে অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এতিমখানা কাম লিল্লাহ বোডিং এর ফান্ড থেকে আব্দুর রব ওয়ার্ছী, আব্দুল আজিজের যোগসাজসে মিশনের কমিটির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারি আবু শোয়েব এবেলের নিকট থেকে ভূয়া জমি ক্রয় করে এতিমখানার ফান্ডে রক্ষিত ৪০ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এমনকি আবু শোয়েব এবেল দীর্ঘ ছয় বছর ধরে ২৪ লাখ টাকা ভাড়া না দিয়ে সাবেক এমপিদের প্রভাবে বহাল তবিয়তে ব্যবসা পরিচালনা করছে। বিষয়টি নিয়ে সদর সহকারি কমিশনার (ভুমি) কার্যালয়ে তদন্তাধিন রয়েছে। এছাড়া সরকারি বিধি-বিধান লংঘন করে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে ৭ টি পদে অবৈধ নিয়োগ বানিজ্য করে প্রায় এক কোটি টাকা আত্বসাতসহ বিভিন্ন বিষয়য়ে জেলা প্রশাসক, দুর্নীনি দমন কমিশন, সমাজসেবা কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বহুবার প্রতিকার চেয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এমনকি পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের পরও বিষয়গুলি প্রধান উপদেষ্টা, জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হয়েছে। অথচ এসব বিষয় নূন্যতম আমলে না নিয়ে উল্টো ওই চক্রের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জেলা প্রশাসক আদালতকে উপেক্ষা করে অন্যায়ভাবে সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের কমিটি ভেঙে দিয়েছেন।

মুলত: ফ্যাসিবাদের সময়ে যারা মিশনকে ব্যক্তিগত সম্পদে রূপান্তরিত করেছে তাদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য তিনি অবিবেচনাপ্রসূত এধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মহামান্য হাইকোট যেখানে রুল জরী করে এডহক কমিটি স্টে করেছেন এরপর মিশনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জলকে তার অফিসে ডেকে এধরনের ঐদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করা, গালাগাল করা আদালত অবমাননার শামীল বলে মনে করেন মিশনের কর্মকর্তারা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মিশনের আলহাজ্জ মো. আব্দুল হামিদ, জিএম মাহবুবর রহমান, মো. আব্দুল খলেক প্রমুখ।


সংবাদ সম্মেলন ডিসি

মন্তব্য করুন-

বাংলাদেশর সকল জেলায় জেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পদে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহী প্রার্থীগণ নিন্মোক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করুন।

নাম: আহসান হাবিব সোহেল
মোবাইল: ০১৭১২২৩১৩৯০
ইমেইল: doinikvoreraloi@gmail.com