ঢাকা নিউমার্কেট এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ, অবৈধ দখলদার ও সন্ত্রাসীদের গডফাদার মকবুল হোসেন সর্দার ও তার স্ত্রী যুব মহিলা লীগ নেত্রী লুনা হোসেন কর্তৃক ঢাকা গভঃ নিউ মার্কেটের দোকান নং-২৬১, ২৬২ ও ২৬৩ অবৈধভাবে দখলের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন লিপিকা দাশ গুপ্তা, সভাপতি বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় শিল্প সমিতি লিঃ।
রোববার ১০ নভেম্বর বিকাল তিনটায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, সাগর-রুনি অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ জাতীয় শিল্প সমবায় সমিতি লিঃ কর্তৃক এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় শিল্প সমিতি লিমিটেড সভাপতি লিপিকা দাশ গুপ্তা বলেন, সম্মানিত অতিথিবৃন্দ ও আমার প্রাণপ্রিয় "বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় শিয় সমিতি লিমিটেড" ও ক্ষুদ্র সমবায় তাঁতী সমিতির হতদরিদ্র সদস্যগন। আমার শুভেচ্ছা নিবেন। আমি গভীর ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে উদ্বেগের সাথে জানাইতেছি যে, আপনারা জানেন এই বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় শিল্প সমিতি লি: ১৯৫৪ ইং সনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সুনামের সাথে সারা দেশের ক্ষুদ্র সমবায়ীদের নিয়ে দেশের আর্থ সামাজিক কর্মকান্ডে অবদান রেখে আসছে। অত্র সমিতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির লক্ষ্যে ১৯৫৪ ইং সনে সরকার বাহাদুর ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে সমিতিকে তিনটি দোকান ঢাকা গর্ত, নিউ মার্কেটে বরাদ্দ দেয় (২৬১,২৬২ ও ২৬৩)। দোকান তিনটি অত্র সমিতি সুচারুভাবে পরিচালনা করে আসছে। এখানে উল্লেখ্য যে, দোকান তিনটির লভ্যাংশের ৮৮% অংশীদার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, বাকী ১২% ক্ষুদ্র দরিদ্র জাতীয় তাঁতী সমবায় গোষ্ঠীর। এই তিনটি দোকানের ১টি দোকান ২০১৪ ইং সনের ২ জানুয়ারী দখলবাজ, চাঁদাবাজ বিএনপির সাবেক সভাপতি পরিচয়দানকারী মকবুল হোসেন তার সন্ত্রাসী ও গুন্ডা বাহিনী দিয়ে দখল করে নেয়। তখন যে সভাপতি ছিলেন তিনি নিউ মার্কেট সমিতিকে বিষয়টি জানাইলে তারা কোন সুরাহা করতে পারে নি। পরবর্তীতে নিউ মার্কেট থানায় পরপর দুটি সাধারন ডায়েরী ও মামলা করে মামলার রায় সমিতির পক্ষে আসাতে সমিতি পুনরায় যখন দোকান দখল করতে যায় তখন মকবুলের গুন্ডা বাহিনী দিয়ে দোকান লুটপাট করে। তাতেও কোন আশানুরূপ ফল পাইনি। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর ৯ আগষ্ট ২০২৪ ইং বাকী দুইটি দোকানে সমিতির ভাড়াটিয়া মো: শাহ আলম ও তার লোকদেরকে জোরপূর্বক দোকান থেকে বের করে দিয়ে দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়। একটি দোকান ব্যাগের অপরটি ফাস্ট ফুডের। বর্তমানে নিউ মার্কেটের কোন বৈধ ব্যবসায়িক সমিতি নেই। ৭ আগষ্ট ২০২৪ ইং মকবুল হোসেন তার সন্ত্রাসী ও গুন্ডা বাহিনী নিয়ে মার্কেট সমিতি অফিস দখল করে এবং নিজেকে স্বঘোষিত সভাপতি ঘোষনা করে। কার্যত নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও হকার সবাই মকবুলের কাছে জিম্মি। তার সামনে কেউ মুখ খুলে কথা বলতে পারেনা। তার চাঁদাবাজী ও দখলবাজী দিন দিন বেড়েই চলছে। মকবুল হোসেনের স্ত্রী লুনা হোসেন বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। সে সময় তাঁর স্ত্রীকে ব্যবহার করে দখলবাজী, চাঁদাবাজী চালাত। বর্তমানে সে নিজেকে বিএনপির সভাপতি পরিচয় দেয় যদিও নিউ মার্কেট থানায় বিএনপির বর্তমান কোন কমিটি নেই। বর্তমানে (বিএনপির ও সমিতির সভাপতি) নাম ভাঙ্গিয়ে মহাসমারোহে বিপুল উৎসাহে সেও তার অনুসারীদের অবৈধ দখলবাজী, চাঁদাবাজী বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি একজন সংখ্যালঘু অসহায় মহিলা, এজন্যই মকবুল আমার সমিতির তিনটি দোকানকে টার্গেট করেছে। অনেকদিন আগে গত সরকারের সময়ে মকবুল কনজুমার সমিতির দুইটি দোকানও দখল করে নেয়।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাহায্যে নকল কাগজপত্র সৃজন করিয়া দোকান বিক্রি করে দেয়। কাগজ ত্রুটির কারণে যা এখন নামজারি বা মিউটেশন করাতে পারিনি। এভাবে মকবুল হোসেন আমাদের জাতীয় সমবায় শিল্প সমিতির দোকানগুলো আত্মসাৎ করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। গত ৯ আগষ্ট ২০২৪ ইং তারিখে দোকান তালা দেওয়ার পর জীবিকার তাগিদে ও মালামাল নষ্ট হওয়ার আশংকায় লোক মারফত মকবুলের সাথে যোগাযোগ করলে সে ৭০,০০,০০০/- (সত্তর লক্ষ) টাকা নগদ চাঁদা দাবী করে এবং প্রতি মাসে দোকান প্রতি ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা করে সর্বমোট ১,২০,০০০/- (এক লক্ষ বিশ হাজার) টাকা দিতে হবে বলে শর্ত আরোপ করে। জাতীয় সমবায় শিল্প সমিতির ভাড়াটিয়ার বিশেষ অনুরোধে তাকে ৩০,০০,০০০/- (ত্রিশ লক্ষ) টাকা নগদ চাঁদা দিলেও বাকি টাকা পরে দিবে বলে আশ্বস্ত করলে দোকান খোলার অনুমতি পাই। বর্তমানে সে পূর্বের চাঁদার ৪০,০০,০০০/- (চল্লিশ লক্ষ) টাকা ও মাসিক ১,২০,০০০/- (এক লক্ষ বিশ হাজার) টাকা পরিশোধ করার জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে। এমতাবস্থায় আমি একান্ত নিরূপায় হয়ে জাতীর সামনে আপনাদের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয় শিল্প সমিতির ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ মালিকানাধীন নিউ মার্কেটের উল্লেখিত দোকানগুলো (২৬১,২৬২ও ২৬৩) দখলবাজ ও চাঁদাবাজ মকবুলের আক্রোশ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি আরও, মকবুলের কোন দলীয় পরিচয় নেই, তার পরিচয় সে মূলত চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও সন্ত্রাসী, যখন যে সরকার আসে তার নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্মগুলো করে থাকে এবং বারবার রেহাই পেয়ে যায়। আপনারা সাংবাদিক জাতীর বিবেক। আপনাদের কাছে জাতীয় সমবায় শিল্প সমিতি লিমিটেডের দরিদ্র ক্ষুদ্র সদস্যগণের প্রত্যাশা, আপনারা এই সমস্যার সমাধানকল্পে সমিতির পাশে থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবেন এবং সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও দখলদার মকবুলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে আশানুরূপ সহযোগীতা করবেন।