এখানে আপনার পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন দিন।

ঢাকা ২৯ জানুয়ারী ২০২৫ বুধবার

ব্রেকিং

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: বাংলাদেশর সকল জেলায় জেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পদে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহী প্রার্থীগণ নিউজ সাইটের যোগাযোগ অংশে প্রদত্ত ঠিকানায় (ফোন, ইমেইল) যোগাযোগ করুন।

আলামিন হোসেন, হরিরামপুর ( মানিকগঞ্জ)

প্রকাশিত: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:০৮

আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:০৮

২০৩

শেয়ার:

পদ্মার ভাঙনে বিলীন কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ১২টি মৌজা: আতঙ্কে গৌড়বড়দিয়া

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ১৩টি মৌজার মধ্যে ১২টি ইতোমধ্যে পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অবশিষ্ট গৌড়বড়দিয়া মৌজার বাসিন্দারাও এখন ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সম্প্রতি ইউনিয়নের ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের পদ্মা নদী তীরবর্তী মালুচি ও কুশিয়ারচরে ভাঙন দেখা দিয়েছে, যা নতুন করে হাজারো মানুষকে আতঙ্কিত করেছে।

News

ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে কুশিয়ারচর গায়েনবাড়ি মসজিদ, হোসেন শাহের মাজার, মালুচি মসজিদ এবং অর্ধশতাধিক বাড়িঘর। স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে একটি স্থায়ী বেরি বাঁধের দাবি জানিয়ে আসছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শামিম গাজী জানান, গত কয়েক বছরে পদ্মার ভাঙনে ইউনিয়নের ৭০-৭৫ শতাংশ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত তিন বছরে কোর্টকান্দি, মুহম্মদপুর ও বৌদ্ধকান্দিতে শত শত বিঘা জমি ও বাড়িঘর ভেঙে গেছে। গত ১০-১৫ দিন ধরে নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে কুশিয়ারচর থেকে শিবালয় উপজেলার মালুচী ঘাট এলাকায় তীব্র স্রোত এবং ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য তোফাজ্জল হোসেন জানান, কুশিয়ারচর এলাকার ফৈজদ্দীনের বাড়ি, বেলায়েত মেম্বার, নুরুল, বনি, রাকিব, বারেক গাজী, আঈয়ুব খাঁ, গেন্দু বেপারী, বিশু বেপাড়ী, লালন, জিয়াউর মেম্বারের বাড়ি এবং মালুচি এলাকার শাহাজদ্দীন, লালমিয়া, আখিজদ্দিন ও ফুলুর বাড়ি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বাড়িগুলো পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে।

কুশিয়ারচর গ্রামের বেলায়েত মেম্বার জানান, তাদের বাড়িটি ১২০ শতাংশের বেশি বড় ছিল, যার ৭০-৮০ শতাংশ ইতোমধ্যে ভেঙে গেছে। দ্রুত সময়ে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “একটা স্থায়ী বেরি বাঁধ চাই আমরা।”

একই গ্রামের কৃষক ফয়েজউদ্দীন জানান, দুইবার বাড়ি ভাঙার পর ৬-৭ বছর আগে কুশিয়ারচর এলাকায় নতুন বাড়ি করেছেন। কৃষি কাজের পাশাপাশি মাছ ধরেন। অনেক কষ্টে তৈরি করা ঘরটি যেকোনো সময় পদ্মায় চলে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

মালুচি এলাকার আখিজদ্দীন জানান, কুশিয়ারচর ও মালুচি এলাকায় বস্তা না ফেললে তাদের বাড়িগুলো যেকোনো সময় ভেঙে যাবে।

কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী বনি ইসলাম রূপক জানান, গত কয়েক বছরে পদ্মার ভাঙনে ১৩টি মৌজার ১২টি ইতোমধ্যে পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। এখন শুধু গৌড়বড়দিয়া মৌজা অবশিষ্ট আছে। গত দুই-তিন বছরে কোর্টকান্দি, মুহম্মদপুর ও বৌদ্ধকান্দিতে শত শত বিঘা জমি ও বাড়িঘর বিলীন হয়েছে। পানি বৃদ্ধির সাথে পদ্মার পানির স্রোতে কয়েকদিন আগে বিল্লাল মেম্বারের বাড়ির সামনে জিও ব্যাগ ধ্বসে গেছে। এখনো ৫০০ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ পড়েনি। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও এবং ইউএনও মহোদয়কে জানানো হয়েছে।

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান জানান, ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকা কুশিয়ারচর ও মালুচি এলাকার বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, হরিরামপুরের চরাঞ্চলে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধে কাজ শুরু হয়েছে। কুশিয়ারচর ও মালুচি এলাকায়ও দ্রুত সময়ে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ৫০ বছর আগে থেকে পদ্মার ভাঙনে এ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউনিয়নে ঘরবাড়ি ও জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে হাজার হাজার পরিবার। গত ৭-৮ বছরে উপজেলার ধূলশুড়া ইউনিয়ন থেকে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পর্যন্ত নদী ভাঙন রোধে তীর রক্ষা কাজে শতশত কোটি টাকার জিও ব্যাগ ফেলে অস্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধের কাজ করা হয়েছে।


ভাঙন

মন্তব্য করুন-

বাংলাদেশর সকল জেলায় জেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পদে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহী প্রার্থীগণ নিন্মোক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করুন।

নাম: আহসান হাবিব সোহেল
মোবাইল: ০১৭১২২৩১৩৯০
ইমেইল: doinikvoreraloi@gmail.com