এখানে আপনার পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন দিন।

ঢাকা ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ বুধবার

ব্রেকিং

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: বাংলাদেশর সকল জেলায় জেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পদে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহী প্রার্থীগণ নিউজ সাইটের যোগাযোগ অংশে প্রদত্ত ঠিকানায় (ফোন, ইমেইল) যোগাযোগ করুন।

মোঃ আলামিন হোসেন হরিরামপুর উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১ আগস্ট ২০২৪, ২২:২৯

আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২৪, ২২:২৯

২১১

শেয়ার:

"পদ্মার ভাঙনে দ্বিখণ্ডিত হয়ে পড়েছে হরিরামপুরের মূল ভূখণ্ড"

নদীভাঙনের কারণে ভৌগোলিকভাবে দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে মানিকগঞ্জের পদ্মা অধ্যুষিত উপজেলা হরিরামপুরের মূল ভূখণ্ড।

News

জেলার বৃহত্তম উপজেলা হরিরামপুরের আয়তন ২৪৫.৪২ বর্গকিলোমিটার, যেখানে পদ্মা নদী পরিবেষ্টিত ১৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি ইউনিয়নই পদ্মার ভাঙনের শিকার হয়ে হাজার হাজার মানুষ জমি ও বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। নদীভাঙনের কারণে অনেক পরিবার জেলা ও ঢাকার সাভার, ধামরাই ও গাজীপুরে স্থানান্তরিত হয়েছে।

এছাড়া, গত কয়েক বছরে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাসহ হাজার বিঘা কৃষিজমি। ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর থেকেই উপজেলায় নদীভাঙন শুরু হয়। ধারাবাহিক ভাঙনের ফলে ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউনিয়নই নদীভাঙনের কবলে পড়ে। সত্তর দশকের মধ্যেই সুতালড়ী, আজিমনগর ও লেছড়াগঞ্জ তিনটি ইউনিয়ন পুরোপুরি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

আশির দশকের শুরুতে উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে বিলীন হওয়া তিনটি ইউনিয়নে চর জেগে ওঠে। ১৯৮৩/৮৪ সালের দিকে এই চরে মানুষজন পুনরায় বসবাস শুরু করে। ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় চরের পুনরায় ভাঙনের ফলে মানুষজন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালের বন্যার পর আবারও চর জেগে ওঠে এবং মানুষজন স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। বর্তমানে চরাঞ্চলে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বসবাস, তবে নদী পাড়ি দিয়েই তারা উপজেলা সদর ও জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। চরাঞ্চলের উৎপাদিত কৃষিপণ্য উপজেলায় খাদ্য চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাকি ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের প্রায় ৭০%, গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ৬০%, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৬০%, বয়ড়া ইউনিয়নের ৭০%, হারুকান্দি ইউনিয়নের ৬০% এবং ধুলশুড়া ইউনিয়নের ৭০% এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাসিন্দারা এখনও পদ্মার আগ্রাসনের শঙ্কায় ভাঙাগড়ার মধ্যে বসবাস করছেন।

উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কোটকান্দি গ্রামের ৮০ বছর বয়সী শেখ সোহরাব জানান, তার বাপ-দাদার বাড়ি ছিল বড় বাহাদুরপুর, যা ১৯৪৯ সালের দুর্ভিক্ষের সময় নদীভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। মহিউদ্দিন সরদার বলেন, তার পূর্বপুরুষদের বাড়ি কুমারকান্দি পদ্মায় চলে গেছে, বাবার কাছ থেকে শুনেছেন নদী প্রায় ৭০ বিঘা জমি গিলে নিয়েছে।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কামাল হোসেন জানান, ১৯৭১ সালের পর থেকে তার ইউনিয়নে ভাঙন শুরু হয়। বর্তমানে প্রায় ৬০% এলাকা নদীগর্ভে চলে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নদীভাঙন রোধে কাজ শুরু হলেও প্রতি বছর কিছু না কিছু ভাঙন ঘটে। স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

আজিমনগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ মোন্নাফ মিয়া জানান, নদীভাঙন রোধের কোনো সমাধান হচ্ছে না। গত বছরে হাতিঘাটা চরে ১৫০ পরিবার ভাঙনের শিকার হয়েছে। 

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ধুলশুড়া থেকে কাঞ্চনপুরের কুশিয়ারচর পর্যন্ত নদীর তীর রক্ষায় প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। চরাঞ্চল রক্ষায়ও প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দীন জানিয়েছেন, বেশিরভাগ এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে এবং অবশিষ্ট কাজের জন্য বাজেটের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ভাঙন শুরু হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


পদ্মা ভাঙন

মন্তব্য করুন-

বাংলাদেশর সকল জেলায় জেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পদে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহী প্রার্থীগণ নিন্মোক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করুন।

নাম: আহসান হাবিব সোহেল
মোবাইল: ০১৭১২২৩১৩৯০
ইমেইল: doinikvoreraloi@gmail.com