এখানে আপনার পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন দিন।

ঢাকা ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ বুধবার

ব্রেকিং

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: বাংলাদেশর সকল জেলায় জেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পদে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহী প্রার্থীগণ নিউজ সাইটের যোগাযোগ অংশে প্রদত্ত ঠিকানায় (ফোন, ইমেইল) যোগাযোগ করুন।

আহসান হাবিব সোহেল

প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০২৪, ১৫:৫৯

আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৪, ১৫:৫৯

১২৩

শেয়ার:

মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবি

মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

News

আজ মঙ্গলবার ২০ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান তানিয়া বলেন, আমি জানি আপনারা কতটা চাপ, ঝুঁকি এবং সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, আমার বোন মুনিয়াকে ধর্ষণ এবং হত্যা করার ঘটনার পর থেকে, আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া আমার বোনের এই ইস্যুতে, দেশবাসীকে এভাবে বসুন্ধরার কুখ্যাত এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে, সোচ্চার করানো যেত না। আপনাদের প্রায় প্রতিটি মিডিয়া হাউসগুলো, বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে মাসে বিজ্ঞাপন পান। তাই অনেকেই সেই বিজ্ঞাপন হারানোর ঝুঁকি নিয়ে, আমার বোনের পক্ষে ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারেন নি।

নুসরাত জাহান তানিয়া বলেন, তথাপি এই সীমাবদ্ধতা নিয়েও, ডেইলি স্টার, মানবকণ্ঠ, প্রতিদিনের বাংলাদেশ, আরো অন্যান্য পত্রিকায়, আরটিভি, গ্রিনটিভি, গাজীটিভি, ইত্যাদি গণমাধ্যম সোচ্চার কণ্ঠে আমার বোনের বিষয়টি, দেশবাসীকে জানিয়েছেন। অন্যরাও যতটুকু সম্ভব নিউজ করেছেন। বিশেষ করে প্রবাস থেকে নাগরিক টিভি যেই ভূমিকা রেখেছে, তার জন্য আমি তাদের কাছেও বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই হাসিনা আক্তারকে, তার টেবিল টক্ অনুষ্ঠানের জন্য, যেখানে আমাকে বেশ কয়েকবার টক্ শোতে কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, আপনারা হয়তো জানেন, মুনিয়াকে মেরে ফেলার সংবাদ পাবার পর, আমি যখন গুলশান থানায় মামলা করতে গিয়েছিলাম, তখন থেকেই ভূমিদস্যু বসুন্ধরা পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকেই কিনে ফেলতে চেয়েছিলো এই হত্যা ও ধর্ষ মামলার ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার উদ্দেশ্যে। তৎকালীন আইজিপি বেনজির এবং গুলশান থানার ডিসি সুদীপ কুমার, এডিসি নাজমুল, ওসি আবুল হোসেন, এসআই আলী আশ্রাফ (পিবিআই) সহ আনভীরকে বাঁচিয়ে দেয়ার জন্য, নির্ল জ ভূমিকা রেখেছিলো। পরবর্তীতে গুলশান থানা আনভীরকে অব্যাহতি দিয়েই তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। আপনারা হয়তো জানেন, আমি আওয়ামী পরিবারের একজন সন্তান। আমার প্রয়াত বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এবং তিনি কুমিল্লাতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে, প্রত্যক্ষভাবেই জড়িত ছিলেন।‌ একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবেও, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে, আমি আমার বোনের হত্যার বিচার দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও, ন্যায়বিচার পাইনি। আমি জানতে পারি, বোনের তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার বান্ধবী তৌফিকা করিমকে দিয়ে, মোটা অংকের টাকা আনভীরের থেকে ঘুষ নিয়ে, মামলা প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। আমি এসব ব্যাপারে পতিত স্বৈরাচার, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী, শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য, একাধিকবার আবেদন করি, এবং প্রায় ২৬ পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখে, তার দৃষ্টি আকর্ষ করার চেষ্টা করি।

তিনি বলেন, কিন্তু তিনি আমার সাথে সাক্ষাৎ দেন নি। আমরা দেখেছি ছাত্র গণহত্যার সময়েও তিনি ভবন এবং অবকাঠামোর ক্ষতি দেখতে যান, অথচ ছাত্রদের দেখতে যাওয়ার সময় তার হয়ে উঠে না। একইভাবে তিনি খুনি আনভীর ও শাহ আলমের সাথে ঠিকই দেখা করেছেন। আপনারা নিশ্চয়ই আনভীরের ফেসবুকে মাসখানেক আগে শেখ হাসিনার সাথে তাদের সাক্ষাতের কিছু ছবিও দেখেছেন। অথচ আমার সাথে একটিবার সাক্ষাতের সময় হয়ে উঠে নি, শেখ হাসিনার।

আমি বিশ্বাস করি শেখ হাসিনার প্রশ্রয় না পেলে, আনভীররা এতটা বেপরোয়া হয়ে ওঠার সাহস পেতো না। পিবিআইতে যখন আমার মামলাটি গেলো, সেখানেও অর্থ ঢেলে, তৎকালীন পিবিআই প্রধান বনজ কুমারকে ঘুষ দিয়ে, তাদের থেকেও একটি একপেশে তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে আসে বসুন্ধরা গ্রুপ। ওই রিপোর্টেও আনভীরসহ সকলকে অব্যাহতি দেয়া হয়। আমি নারাজি জানানোর পর সেটাও আদালতে খারিজ হয়ে যায়।

তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চয় নারাজি পিটিশন খারিজের পর, নাগরিক টিভির নাজমুস সাকিবের প্রতিবেদনটি দেখেছেন। সেই প্রতিবেদনে নাজমুস সাকিব কিছু অডিও রেকর্ড ফাঁস করেন, যা থেকে প্রমান হয়ে যায় বিচারক কিভাবে প্রভাবিত হয়ে আনভীরের পক্ষে রায় দেন, এবং আমার নারাজি পিটিশন খারিজ করে দেন। এভাবে মুনিয়া হত্যা ও ধর্ষ মামলাটিকে নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট, ও আদালতের রায়কে আওয়ামী আমলের বিচারহীনতার সংস্কৃতিরই, একটি নির্ল জ্জউদাহরণ হিসেবেই আমি, অবিহিত করতে পারি।

সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো মুনিয়া গর্ভবতী ছিল, পিবিআই তাদের তদন্তেও বলেছে সেটা ছিলো আনভীরেরই সন্তান। অথচ সেই আনভীরকে তারা DNA স্যাম্পল টেস্ট করতে বললো না। তারা মামলার অন্যান্য আসামি, যেমন সাইফা মিম ও পিয়াসাকে গ্রেপ্তার করলেও, আনভীরকে একটিবারের জন্যও জিজ্ঞাসাবাদ বা গ্রেপ্তার করে নি। অর্থাৎ বিচারের নামে কিরকম তামাশা হয়েছে, সেটা নিশ্চই আপনারা বুঝতে পারছেন।

এত অন্যায় ও অবিচারের পরেও, আমি আনভীরদের হুমকি, টাকা ও প্রলোভনের কাছে বিক্রি হয়নি। আমি হালও ছেড়ে দেইনি। আমার মামলা এখনো চলমান আছে। আমি বিশ্বাস করি হাসিনার পতনের পর, এই স্বাধীন বাংলাদেশে আমি ন্যায়বিচার এখন প্রত্যাশা করতেই পারি। নোবেল বিজয়ী অর্থ নীতিবিদ সর্ব জনশ্রদ্ধেয়, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার, তার আইন উপদেষ্টা ডক্টর আসিফ নজরুল স্যার, তারা দুজনেই অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ মানুষ। তাদের কাছে আমি আমার বোনের ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।

তিনি আরও বলেন, আমি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, বাংলাদেশের কয়েকজন সু- নাগরিকগণকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আলোকচিত্রশিল্পী, শহিদুল আলম সাহেবকে। বুদ্ধিজীবীদের মাঝে শহিদুল আলম ভাই এবং ওনার স্ত্রী রেহনুমা আপা শুরু থেকেই আমাদের পাশে ছিলেন এবং আছেন। ওনারা মুনিয়া ইস্যুতে আমার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন। আমি বিশ্বাস করি আমাদের এই লড়াই আজ আর একার লড়াই নয়। মুনিয়ার ন্যায়বিচার নিশ্চিতের মাধ্যমে, দেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ হবে, এটাই হোক আমাদের সকলের প্রত্যাশা। আমি এই সরকারের সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে আনভীর ও তার পিতা ভূমিদস্যু বসুন্ধরার চেয়ারম্যান শাহ আলম সহ অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেপ্তার করে মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি হিসেবে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও হত্যার বিচার নিশ্চিতকরনের জন্য আবেদন করছি।


ধর্ষণ মুনিয়া

মন্তব্য করুন-

বাংলাদেশর সকল জেলায় জেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পদে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহী প্রার্থীগণ নিন্মোক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করুন।

নাম: আহসান হাবিব সোহেল
মোবাইল: ০১৭১২২৩১৩৯০
ইমেইল: doinikvoreraloi@gmail.com