শুক্রবার সাতক্ষীরার সাংবাদিক ঐক্য অফিসে গনমাধ্যম কর্মীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় একথা জানান এজাজ আহমেদ স্বপন। তিনি বলেন, আমরা এসব বিষয় নিয়ে সরকারের সকল পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছি। এতে অগ্রগতিও রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা যাতে কোনরকম হয়রানির শিকার না হন এবং তারা যাতে আমদানি রফতানি কাজে এই বন্দরবিমুখ না হন সেজন্যও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এরই মধ্যে ভোমরা বন্দরে ট্রাকপ্রতি আমদানি চার্জ ৪০০ টাকার স্থলে ২০০ টাকা এবং রফতানি চার্জ ২০০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা আগ্রহী হবেন। এছাড়াও ভোমরা বন্দরের বিপরীতে ভারতের ঘোজাডাঙায় বাংলাদেশে আমদানিমুখী ভারতীয় ট্রাক থেকে যে মোটা অংকের টাকা আদায় করা হচ্ছে সেটাও সহনশীল স্থানে নিয়ে আসার ব্যাপারে আমরা কাজ করছি।
এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর ভোমরা বন্দরে অনুষ্ঠিত সাধারন সভায় যে প্রক্রিয়ায় কাজী নওশাদ দিলওয়ার রাজু ও মোস্তাফিজুর রহমান নাসিমকে সভাপতি ও সম্পাদক করে যে কমিটি ঘোষনা করা হয় তা আইনসম্মত ভিত্তি লাভ করেনি। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রীট করার প্রেক্ষিতে খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের একটি নির্দেশনা আসে। এই নির্দেশনায় বলা হয়, উক্ত কমিটি গঠনতান্ত্রিক বিধি মোতাবেক করা হয়নি। এর ওপর ভিত্তি করে খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর প্রস্তাবিত ৫ সদস্যের একটি আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়। আহবায়ক কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, মোঃ আশরাফুজ্জামান আশু, রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, মোঃ মাকসুদ খান ও মোঃ মিজানুর রহমান। ২ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করা ৫ সদস্যের এই কমিটি আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে বিধি অনুযায়ী সাধারন সভার মাধ্যমে একটি পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করবে বলে খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে।
কমিটির আহবায়ক এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, আমরা দায়িত্ব লাভের পরেই প্রথম মিটিংয়ে রাজু-নাসিম কমিটির আর্থিক অনিয়মের বেশকিছু নজির পেয়েছি। এ অনিয়মগুলি দূর করার ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। এমনকি এই ব্যাপারে দূর্নীতি দমন কমিশনেও অভিযোগ করা হতে পারে। তিনি বলেন, আমদানি ও রফতানি চার্জ ইতিমধ্যেই আমরা কমিয়ে দিয়েছি।
এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, সাতক্ষীরায় অর্থনৈতিক জোন স্থাপনের তোড়জোড় চলছে। এর মধ্যে জমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়াও রয়েছে। অপরদিকে পূর্নাঙ্গ স্থলবন্দর হিসাবে ভোমরা বন্দরকে আরও সম্প্রসারিত করা এবং বসন্তপুরের সেই প্রাচীন বন্দরে প্রান ফিরিয়ে আনার যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দফতরে এসব বিষয়ে যোগাযোগ চলছে।
জনাকীর্ন গনমাধ্যমকর্মীদের এই সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নাসেরুল হক, সিএ্যান্ডএফ আহবায়ক কমিটির দুই সদস্য মাকসুদ খান ও মিজানুর রহমান।
উল্লেখ্য যে, গত ৪ সেপ্টেম্বর ভোমরা সিএ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের সভাপতি এইচএম আরাফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় সিএ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের সাধারন সভা। এতে প্রধান ও বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য একে ফজলুল হক। সাধারন সভার এক পর্যায়ে সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ৯ সদস্যের একটি পূর্নাঙ্গ কমিটির ঘোষনা দেন। এতে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক হন কাজী নওশাদ দিলওয়ার রাজু ও মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম। এই কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠে এবং একইসাথে গঠনতান্ত্রিক বিধি অনুযায়ী তা তৈরী করা হয়নি মর্মে সিএ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের সাধারন সদস্য এজাজ আহমেদ স্বপন হাইকোর্টে একটি রীট পিটিশন করেন। এর প্রেক্ষিতে শ্রম অধিদপ্তরের আদেশ অনুযায়ী রাজু-নাসিম কমিটিকে বেআইনী ঘোষনা করে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।"