শেরপুর সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় শীতের তীব্রতা যেন শেরপুর জেলার সব কয়টি উপজেলায় ঝেঁকে বসেছে।
সন্ধ্যা নামার আগেই শুরু হয় কুয়াশা পড়া। মাগরিব নামাজের পরে রাস্তায় বেড় হলে দূরের কিছু দেখাতো দূরের কথা মাঝে-মধ্যে হাতের নাগালের অনেক কিছু দৃষ্টির বাহিরে থেকে যায়। আর এ কুয়াশা থাকে প্রায় দিনের মধ্যভাগ পর্যন্ত। এতে দরিদ্র শীতার্তরা করুণ অবস্থায় পড়েছেন। কর্মহীন হয়ে পড়ছেন কৃষি শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের মানুষ।
এমতাবস্থায় শেরপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দরিদ্র, অসহায় শীতার্ত প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বা কম্বল বিতরণ কর্মসূচি চালাচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে মান্যবর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনার কলি মাহবুবের নির্দেশনায় নকলা উপজেলাতেও দরিদ্র, অসহায় শীতার্ত প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী মানুষের শীতবস্ত্র বা কম্বল বিতরণ কাজ চলমান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান দিনের বেলায় অফিস করেন, আর শীতের তীব্রতা বিবেচনায় কনকনে শীত উপেক্ষা করে রাতের আধারে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে দরিদ্র শীতার্তদের হাতে কম্বল পৌঁছে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ জানুয়ারি রবিবার রাতে উপজেলায় কুর্শাবাদাগৈড় ও বাজারদী এলাকায় ঘুরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসহায় দরিদ্র শীতার্ত প্রবীণ, প্রতিবন্ধীদের হাতে কম্বল তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান। এছাড়া পৌর শহরের বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান করা বেশ কিছু অসহায় শীতার্ত পথচারীর মাঝে তিনি কম্বল বিতরণ করেন।
রাতের আধারে ঘুরে ঘুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমানের কম্বল বিতরণের যাত্রাকরা দেখে তাঁর মানবতা, মহানুভবতা, পরোপকারিতা, সহনশীলতাসহ বিভিন্ন মানবীয় গুণাবলী সরাসরি উপলব্ধী করতে ও নিজের মধ্যে লালন করতে তাঁর পিছনে পিছনে প্রতিটি বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন- নকলা প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী হিতৈষী সংস্থার সভাপতি আসাদুজ্জামান সৌরভ, নকলা ইয়্যুথ রিপোর্টার্স ক্লাবের সহ-সভাপতি নাহিদুল ইসলাম রিজনসহ বিভিন্ন সংগঠনের বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক।
উপজেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ক্ষমতাধর কর্মকর্তার এমন উদারতা ও মানবিকতা দেখে খুশিতে অনেকে আত্মহারা হয়ে পড়েন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমানের হাত থেকে একটি কম্বল পেয়ে শীতার্তদের শীত যেন দূরে চলেগেছে অনেকের মুখে হাসি দেখে এমনটাই বুঝা গেছে। ঘরে বসে থেকে ইউএনও মহোদয়ের হাত থেকে কম্বল পেয়ে অসহায় দরিদ্র শীতার্ত মানুুষগুলো যেন শীতকে জয় করে ফেলেছন। কম্বল হাতে পেয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনার কলি মাহবুব ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুর রহমানসহ এসব বিতরণে অংশ গ্রহনকারী ও সংশ্লিষ্টদের জন্য কোন কোন শীতার্তকে আবেগময় অবস্থায় দুই হাত তুলে দোয়া করতে দেখা গেছে।
ইউএনও জাহিদুর রহমান বলেন, চলমান কনকনে শীতে দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করতে পেরে সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে সরকারের উদ্দেশ্যকে সফলতার দিকে দাবিত করতে পেরে নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে করছি। তিনি জানান, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক দেশের কোন মানুষ ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না। অতএব দেশের কোন মানুষ শীতার্ত থাকার প্রশ্নই আসেনা। যে সকল দরিদ্র শীতার্তরা এখনও শীত বস্ত্র বা কম্বল পায়নি, প্রয়োজনে তাদের হাতে কম্বল পৌঁছে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।