মাধবপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মেয়র পদটি আওয়ামী লীগের দখলে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন একটি বিরাট ফ্যাক্টর এখানে। তাই এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে হচ্ছেন, তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যেও কৌতূহলের শেষ নেই।
তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে হচ্ছেন- তা নিয়ে ভোটারসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে চুলচেড়া বিশ্নেষণ। প্রবীণ-নবীন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলীয় মনোনয়ন পেতে জেলা থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত যার যার মতো করছেন লবিং।
গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন হীরেন্দ্র লাল সাহা। এবার শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না- এমন ঘোষণা দেয়ার পরপরই অনেক নতুনমুখ হেভিওয়েট মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মনোনয়ন দৌড়ে মাঠে নেমেছেন। কার ভাগ্যে সেই সোনার হরিণ (নৌকা প্রতীক) আসে এ নিয়ে সরগরম স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গন।
দলীয় মনোনয়ন পেতে এবার কোমরবেঁধে মাঠে নেমেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুই বারের সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোহাম্মদ মুসলিম, বিদায়ী মেয়র হীরেন্দ্র লাল সাহার ছোট ভাই আওয়ামী লীগ নেতা পঙ্কজ কুমার সাহা, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান শ্রীধাম দাশগুপ্ত, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বেণু রঞ্জন রায়, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম টিটু, প্রচার সম্পাদক শাহনেওয়াজ শানু ও ছাত্রলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম শান্ত।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোহাম্মদ মুসলিম বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করছি। দলের দুর্দিনে হামলা, মামলা, হয়রানির শিকার হয়েছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্ছিন্ন হইনি। প্রায় তিন যুগ আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। গত নির্বাচনে আমাকে প্রতীক দেয়া হয়নি। এজন্য দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনও করিনি। তাই এবার মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’
আওয়ামী লীগ নেতা পঙ্কজ কুমার সাহা বলেন, ‘আমি তৃণমূল আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মী। ছাত্রজীবন থেকে নৌকার জন্য কাজ করছি। আমার ভাই বিদায়ী মেয়র হীরেন্দ্র লাল সাহা অসুস্থতার কারণে নির্বাচন করতে পারছেন না। আমি আশাবাদি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।’
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান শ্রীধাম দাশ গুপ্ত বলেন, ‘পৌর এলাকায় সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোট ব্যাংক রয়েছে। আমার বিশ্বাস নেত্রী আমাকে মূল্যায়ন করবেন। নৌকার বিজয়ের জন্য আমি সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করব।’
পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম টিটু বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী হয়ে সততার সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ করে আওয়ামী লীগে এসেছি। নিজের স্বার্থে দলকে ব্যবহার করিনি। আশা করি, দল মূল্যায়ন করে নৌকা আমাকেই তুলে দেবে। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের পক্ষে আমার অবস্থান সুদৃঢ়।’
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ২ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত হয় মাধবপুর পৌরসভা। প্রায় ৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভাটি ২০১২ সালে প্রথম শ্রেণির মর্যাদায় উন্নীত হয়। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ পৌরসভায় মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। এর মধ্যে ভোটার ১৫ হাজার ৯৮৭ জন। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর।