হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় ফয়সল নামের এক কলেজ ছাত্রকে খুঁটিতে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে এখনও পলাতক রয়েছে ঘটনার মূল হোতা মা ও মেয়ে।
সোমবার দুপুরে বাহুবল মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন নির্যাতিত কলেজ ছাত্রের মা রাবিয়া খাতুন। কুয়েত প্রবাসী আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী জাহানারা আক্তার লিপিকে প্রধান ও তার কন্যা প্রেমিকা মাহফুজা আক্তার লিজাসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হল, বাহুবল উপজেলার দ্বিমুড়া গ্রামের অভিযুক্ত সালাউদ্দিন (৫২) ও মঈন উদ্দিন (৪০)। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরো রয়েছে ৬ জন। আটককৃতদের গতকাল বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দ্বিমুড়া গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে মাহফুজা আক্তার লিজার সাথে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল ফয়সল মিয়ার। শুক্রবার দিবাগত রাতে প্রেমিকার নিমন্ত্রণে দেখা করার জন্য লিজার বাড়ীতে যায় ফয়সল। এ সময় ফয়সলকে চোর আখ্যা দিয়ে আটক করে লিজার স্বজনরা। পরে খুঁটিতে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় তার ওপর রাতভর চালানো হয় নির্যাতন। পরদিন শনিবার সকালে খবর পেয়ে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ ফয়সলকে উদ্ধার করে স্বজননের জিম্মায় দেয়। স্বজনরা তাকে প্রথমে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল ও পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে সিলেট সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এদিকে, রবিবার (০১ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে জেলাজুড়ে শুরু হয় তোলপাড়। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন লোক ফয়সল মিয়া নামে ওই কলেজ ছাত্রকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করছে। এ সময় ফয়সল বাঁচার জন্য আকুতি এবং বার বার আল্লাহ অল্লাহ বলে চিৎকার করছিল। কিন্তু এরপরও চলে বর্বর নির্যাতন। নির্যাতিত ফয়সল চুনারুঘাট উপজেলার হাসেরগাঁও গ্রামের আহসান উল্ল্যার ছেলে। সে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অনার্স (গণিত বিভাগ) চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ও কোরআনের হাফেজ। নির্যাতিত কলেজে ছাত্র ফয়সলের বোন মোছাঃ হানিফা আক্তার জানায়, আমার ভাই পাগল হয়ে গেছে, তার মাথায় প্রচন্ড আঘাত পেয়েছে। এখন পর্যন্ত সে কাউকে ছিনতে পারছেনা। বাহুবল মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর কবীর মামলা দায়েরের বিষয়টির নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় রোববার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছে।