*************************************
"""""'"""""**মাহমুদ**"""""""""""""""""
@@@@@@@@@#@@#####@@@@@
বড় একটি খামের ভিতর করে শাহিদা ৩৬ টি চিঠি পাঠিয়েছে। সম্ভবত আমার কাছে আর কোনদিন শাহিদার কোন চিঠি আসবেনা। শাহিদার বিয়ের ১৩ দিন বাকি।
চিঠিগুুলো মনে হয় একেক সময় একেকটা লিখত। কখনো কাঁপা কাঁপা হাতে লিখা, কখনো বাকাতেড়া লিখা, কখনোবা হাতের লেখা সুন্দর করার চেষ্টা।
আমার বাড়ি কুমিল্লা জেলার মনোহরগন্জ থানা। আমরা তিন ভাই তিন বোন, আমি সবার ছোট। আমার মা এবং বাবা একই স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
আমি সবার ছোট হওয়াতে সবার এত বেশী আদর স্নেহ পেয়েছি যা ভুলবার মত নয়। তাই হয়তো এত দুষ্টুর সেরা দুষ্ট হয়েও সবার কাছ থেকে আদর পেয়েছি, পেয়েছি ভুলতে না ভালবাসা।
আমি কোনদিন স্কুলে বই নিয়ে গেছি বা স্কুল থেকে বই নিয়ে এসেছি কিনা আমার মনে পড়েনা। কখনো বাবা, কখনো মা, কখনো বা ভাই বা আপু আমার বই আনা নেয়া করত। আমি শুধু গিয়ে ক্লাস করতাম আবার খেলতে বেরিয়ে পড়তাম। দুষ্টুমির জন্য বাবা আমাকে মারলে মা কান্না করত, মা মারলে ভাই আর আপু আমার জন্য কান্না করত।
আমার একটি মাত্র মামা, থাকে সিলেট জাফলং। তিনিও সেখানকার স্কুলের শিক্ষক। আমার নানাও ছিলেন শিক্ষক, একদম শিক্ষকের পরিবার আমার নানার পরিবার।
খুব ছোট বেলায় গিয়েছিলাম মামাদের বাড়ি, মামা কুমিল্লা থেকে গিয়ে সিলেট জাফলং এ বাড়ি করেছেন, যেহেতু সেখানে শিক্ষাকতা করেন।
আমি ১৯৮৯ সালে এস. এস. সি পরীক্ষা দিয়েছি। তখন অবশ্য মেট্রিক পরীক্ষা বলত।
এস. এস. সি পরীক্ষা দেয়ার পর আব্বুর সাথে মামা বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছি।
জাফলং থেকেও অনেক ভিতরে পাহাড়ি রাস্তা ধরে যখন বাস উপরের দিকে ওঠছিল, তখন আমার কাছে মনে হচ্ছে আকাশটা মনে হয় সামনের পাহাড়ের চূড়ায় এসে ঠেকে গেছে। এই নিয়ে আব্বুর সাথে অনেক তর্ক করলাম। আমার একটাই কথা এখানেই পৃথিবীর শেষ। আর আব্বু বলতেছে সকালে ওঠে দেখিস তোর ভুল ভেঙ্গে যাবে।
মামার বাড়ি পৌছেও খাওয়া দাওয়া করে আমার সার রাত ঘুম হয়নি।
আমার তখন মন বলছে কখন সকাল হবে আর কখন আব্বুকে দেখাব যে এখানেই পৃথিবীর শেষ।
সকালের আলো ফোটতেই আমার হাসি হাসি মুখ খানা কালো মেঘের মত হয়ে গেছে, আকাশতো অনেক অনেক উপরে।
খুব সুন্দর একটা মেয়ে পাশের ঘর থেকে স্কুলের বই নিয়ে দৌড়ে বের হয়ে গেল। এত সুন্দর মেয়েটি অথচ এক পলক ভাল করে দেখতেও পারলামনা। তবে মামাদের ঘর থেকে বেরিয়ে গেল, মেয়েটি কে হতে পারে? আমার মনে ঘুরে ফিরে একটাই চিন্তা।
অবশেষে বিকেলে জানতে পারলাম সে আমার মামার একমাত্র মেয়ে।
সে যে খুশি হোক, আমার খুব ভাল লেগেছে আমি কি করব? শুধু তাকিয়ে থাকতে মন চায়। আমাকে যদি বলে তোকে দুইবেলা খাবার দেবনা তুই শুধু শাহিদার দিকে তাকিয়ে থাকবি, আমি তাকিয়ে থাকতে পারব।
ও, মেয়েটির নাম শাহিদা। শাহিদা স্থানীয় স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। শাহিদাকে কখনো আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখিনি, মাঝে মধ্যে তাকালে যখন দেখত আমি এক নাগারে তাকিয়ে আছি তখন আবার অন্যদিকে চোখ ঘুরিয়ে ফেলত।
পরেরদিন আব্বু চলে আসবে কুমিল্লায়। আমার যেহেতু পরীক্ষা শেষ, রেজাল্ড দেয়ারও বাকি তাই আমাকে রেখে এসেছে। আমাকে মামা পরে সাথে করে নিয়ে আসবে।
শাহিদা আমাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে, যেহেতু বাড়িতে আমার সমবয়সী কেউ নেই সেহেতু বিকেলে আমাকে নিয়ে ঘুরার দ্বায়িত্বটা শাহিদারই। সকালে অবশ্য আমি একাই থাকতাম, শাহিদা স্কুল থেকে ফিরলে ঘুরতে বের হতাম। শাহিদার বেশীরভাগ বান্ধবী উপজাতী। আমি কিছুই বুঝতামনা অথচ শাহিদা উপজাতিদের ভাষাও বুঝত নিজেও বলতে পারত। ওর অনেক উপজাতী বান্ধবীদের বাড়িতেও গিয়েছি।
আমি যতই ঘুরিনা কেন আমার দৃষ্টি শুধু শাহিদার দিকেই। কেমন মন ভোলানো মায়াবী একটা চেহারা। মাঝে মধ্যে তাকিয়ে থেকে এতটাই মগ্ন হয়ে যেতাম যে শাহিদা তিন চার ডাক দিয়ে বলত কি হয়েছে? আমি বলতাম না কিছুনাতো।
তবে আমিতো জানি আমার মনে কিছু ঘটতে যাচ্ছে। আমার হৃদয়ে কারো জন্য ভালবাসার ঘর তৈরী হচ্ছে। আমার মনে প্রেম এসেছে, ভালবাসা এসেছে। আমি যে শাদিহাকে ভালবাসতে শুরু করেছি।
সন্ধার পরে শাহিদা পড়তে বসত, আমিও টেবিলের পাশের চেয়ারে বসতাম। কখনো পড়া বলে দিতাম।
শাহিদাও আড়চোখে আমার দিকে তাকাত, তবে সেই তাকানোর ভাষা আমি বুঝতামনা। আমি প্রতিদিন শাহিদাকে একটি করে ফুল দিতাম, কাগজ দিয়ে তৈরী করে।
প্রতিদিনই কাগজের ফুলটির একপাশে শাহিদা আরেকপাশে আনোয়ার লিখে দিতাম। কোনদিন কোন প্রশ্ন করেনি, তবে ফুলটি পেয়ে অনেক খুশি হত।
আমারো সাহস দিন দিন বাড়তে লাগল, আমি কাগজে লাভ একে তার ভিতরে আনোয়ার+শাহিদা লিখে দিতাম। শুধু মুচকি একটা হাসি দিত, আর কিছুই বলতনা।
আমার আর বুঝতে বাকি নেই যে শাহিদাও আমাকে ভালবাসে।
কি দরকার ঢাক ঢোল পিটিয়ে বলার, দুজনের চোখের ভাষায় আর মনের ভাষায় যদি বুঝতে পারি আমরা দুজন দুজনকে ভালবাসি তবে আর সরাসরি বলারইবা কি প্রয়োজন।
খুব বেশী মনে পড়ে, একদিন পাহাড়ের ঢালু থেকে শাহিদা একটি সাদা ফুল দিয়েছিল আমার হাতে, দিয়ে বলেছিল "ভালবাসা হবে ফুলের মত পবিত্র আর মন থাকবে সাদা রংয়ের মত পাপমুক্ত"
কথাটি আমার আজীবন মনে থাকবে।
আমি বাড়িতে চলে আসার আগের দিন শাহিদাকে খুঁজে পাচ্ছিলামনা। অবশেষে সেই পাহাড়ের ঢালুতে খুঁজে পেয়েছি। দূরে দৃষ্টি দিয়ে নীরবে কাঁদতেছিল, আমাকে দেখে তারাতারি করে চোখ মুছল।
--- শাহিদা, কাল চলে যাচ্ছি।
--- জানি।
--- কিছু বলবেনা?
--- ভাল থেকো।
---আর কিছু বলবানা?
--- সুযোগ পেলে আসিও, কষ্ট কম হবে, ভাল লাগবে।
আমি অবশ্যই আসব শাহিদা, তুমি কোন চিন্তা করোনা। কলেজে ভর্তি হওয়ার কয়দিন পরেই চলে আসব আমি।
বাড়ির কাছাকাছি তিনটে কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছি, তবে আমি কাছাকাছি কোন কলেজে ভর্তি হবনা।
বাড়ি থেকে কলেজে গেলে আমার সমস্যা। শাহিদাকে দেখতে যেতে পারবনা। দূরের কোন কলেজে পড়লে চুপ করে চলে যেতে পারব, কারন বাবা মা আমাকে একা কখনো মামা বাড়ি যেতে দিবেনা।
অবশেষে ভিক্টোরিয়াতে ভর্তি হলাম। নয়দিন পড়েই বাবা মাকে না জানিয়ে আমি সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। কি করব? কিশোর মন আমার, শাহিদার কাছে যাওয়ার জন্য মন কেমন ব্যাকুল হয়ে আছে।
আমাকে দেখে মামা মামি অনেক অবাক হয়েছিল। আমি বলেছি বাবা মাকে বলেই এসেছি।
মোবাইল ছিলনা, চিঠির যোগ। তিন চারদিন লাগবে খবর পৌছতে, চিঠির উত্তর মামার কাছে আসতে আসতে আরো চারদিন। আমার শাহিদাকে এই আটদিন কাছে পাব। আমি ভাল করে জানি বাবা মা বকা দিলেও আমাকে মারবেনা।
শাহিদা আমাকে দেখে এত খুশি হয়েছে যে, এই প্রথম আমার হাত ধরে ঘুরে বেড়িয়েছে। ওর স্কুলের উপজাতী বান্ধবীদের কাছে নিয়ে গেছে। দুইদিন বাড়ি থেকে স্কুলে যাবে বলে বই নিয়ে বের হয়েছে কিন্তু স্কুলে না গিয়ে আমাকে নিয়ে পাহাড়ী আঁকা বাঁকা পথ দিয়ে ঘুরে বেরিয়েছে। পজাপতি যেন ওড়ছে চারিদিকে।
শুধু একবার আলতো করে বলেছিল, "আমি জানতাম, আমার বিশ্বাস ছিল তুমি আসবে। আমার মন বলছিল তুমি আসবে। কতযে অপেক্ষা করেছি, সেটা আমি জানি আর আমার আল্লাহ জানে। মনে হচ্ছিল কত জনম তোমাকে দেখিনা। এখন আমার সব অপেক্ষা শেষ, আমার আনন্দের দিন। আমার ভালবাসা ফিরে এসেছে।"
শেষের কথাটা বলে জিহবায় কামড় দিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। লজ্জায় আমার দিককে তাকাচ্ছেইনা। কয়েকবার বলার পর তাকিয়েছে, তবে দৃষ্টি নীচের দিকে। সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম আমাদের নিষ্পাপ ভালবাসার গভীরতা।
পরের দুবার মামার বাড়িতে যাওয়ার পর ধরা পড়ে গেলাম। মামাও বুঝে ফেলল আমার ঘন ঘন যাওয়ার কারন।
শেষে মামা আমার মায়ের কাছে সব বলে দিল। আমার বাবা মা কখনোই চাইতনা আমার আর শাহিদার সম্পর্ক গড়ে ওঠুক। মামাও চাইতনা, তবে আমার আর শাহিদার অবস্থা দেখে মামা মনে মনে রাজী ছিল। কিন্তু আমার বাবা কখনোই চাইতনা এত দূরে আমার কোন সম্পর্ক হোক, যতই মামা বাড়ি হোক। আর তাই আমাদের দুই পরিবারের সম্পর্ক নষ্ট হতে লাগল। আমার কারনে মা আর মামা, ভাই বোনের সম্পর্কেও কেমন যেন তিক্ততা চলে এল। আমার বাবা মায়ের অভিযোগ শাহিদার জন্য আমার ভবিষ্যত নষ্ট হচ্ছে, মামার অভিযোগ আমাকে বেঁধে রাখতে পারেনা কেন? আমি যাই কেন মামার বাড়ি?
পরেরবার যখন গিয়েছিলাম, আমার হাতে টাকা পয়সা ছিলনা। শুধু পড়নের কাপড় পড়ে রেলগাড়ির ছাদে ওঠে সিলেট চলে গেছি। কিন্তু সেখান থেকে মামাদের বাড়ি যাওয়ার ভাড়া ছিলনা।
এখন কোথায় যাব কি করব? আবেগে পড়ে ভালবাসার টানে চলে এসেছি। কিন্তু বাকি পথ যেতে পারছিনা। না খেয়েইবা আর কত?
অবশেষে এক গাড়ীর ওয়ার্কসপে কাজ নিলাম পেটে ভাতে।
তখন আমি ইন্টার পাস করেছিলাম, আর শাহিদা এস এস সি দিয়েছিল।
ওয়ার্কসপে এগারোদিন কাজ করার পর কিছু টাকা হাতে নিয়ে আবার রওনা দিলাম মামা বাড়ি।
মামাতো রেগে আগুন হয়ে আছে। আমাদের বাড়ি থেকে বাবা আর বড় ভাই এসে মামা বাড়িতে আমাকে খুঁজে পায়নি।
মামা শেষে বলতেছে চল তোকে বাড়ি দিয়ে আসি।
আমি বলেছি মামা আমি দুদিন থেকেই চলে যাব। মামা আমার কথা রেখেছে।
সে দুদিনই আমি আর শাহিদা কান্না করেছিলাম আমাদের ভালবাসার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে।
বাড়িতে তুমোল ঝগড়া করলাম, তবুও বাবা মায়ের একটাই কথা শাহিদার সাথে আমার সম্পর্ক কিছুতেই মেনে নেবেনা।
শেষে কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলাম। এক বন্ধুর বাড়িতে ছিলাম কয়েকদিন,। তার বড় ভাইয়ের মাধ্যমে ভিসার ব্যাবস্থা করে ১৯৯২ সালে চলে এলাম বিদেশে
এসে অনেকদিন শাহিদার সাথে যোগাযোগ হত আমার এই চিঠিতেই।
আজ শেষ চিঠিগুলো বড় খামে ভরে পাঠিয়েছে শাহিদা। ছোট ছোট ৩৬ টা চিঠি।
চিঠিগুলো পড়েই বুঝতে পারলাম আমার শাহিদা চিঠিগুলো লেখার সময় কত চোখের জল ঝরিয়েছে। কত কষ্ট কত বেদনা কত হাহাকার বুকে চাপা দিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে তার শেষ চিঠিগুলো লিখেছে।
তার বিয়ের আর তেরো দিন বাকি। আমি কি করে সহ্য করি, আমার ভালবাসা হারিয়ে যাবে চিরদিনের জন্য। আমার শাহিদার সাথে এই জীবনে আর ভালবাসার মিলন হবেনা। আমার আর্তনাদ আমার শাহিদার চিৎকার কেউ শুনলনা। কুরবানী হতে যাচ্ছে আমাদের নিষ্পাপ ভালবাসার।
বাচ্চাদের মতই কেঁদেছি, সাথের জনরা আমাকে শান্তনা দিয়েও ব্যার্থ হয়েছে। আমার কলিজা যে ছিড়ে যাচ্ছে। আমি যে শাহিদাকে ছাড়া আর কিছুই কল্পনা করতে পারিনা।
১৯৯৬ সাল। আমার শরীরে ফক্স বের হয়েছে। আমি মরুভূমির গরম পাথরে নিজের শরীর দিয়ে গড়াগড়ি খাইতাম। আত্মহত্যা না করলেও মৃত্যুটাই ছিল আমার কাম্য। কারন আমার শাহিদা যে এই মায়ার পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে চিরদিনের জন্য।
শাহিদার তৃতীয় বাচ্চা ভূমিষ্ট হওয়ার সময় শাহিদাকে আর বাঁচাতে পারেনি।
টেলিফোন ছিল, আমি খবর নিতাম শাহিদার উপজাতী বান্ধবীকে ফোন দিয়ে। আধা বাংলায় শাহিদার বান্ধবীর মুখে শাহিদার মৃত্যু সংবাদ শুনে আমি বাকরুদ্ধ। পাগলের মত হয়ে গিয়েছিলাম। ভালবাসার কান্নার শেষ কোথায়।
এখন ২০১৬ সাল। অনেক অতীত জীবন পাড়ি দিয়েছি। বাবা মায়ের শেষ অনুরোধ রাখতে গিয়ে আমিও বিয়ে করেছি। আমার ছেলের বয়স এখন ষোল বছর, ছয় বছরের একটি মেয়েও আছে। বাবা মারা গিয়েছিল আমার হাতের কাছে, কোলে মাথা রেখে।
আর মা যখন মারা যায় আমি বিদেশে ছিলাম।
কত বছর, কত মাস, কত দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। সময়গুলো যাচ্ছে তার নির্দিষ্ট গতীতে। তবে জীবন?
জীবন চললেও জীবন নির্দিষ্ট গতীতে চলেনা, তাকে চালাতে হয়।
আজ থেকে ২৭ বছর আগে প্রেমে পড়েছিলাম শাহিদার। ভালবেসেছি হৃদয়ের গভীর থেকে। আজ শাহিদা নেই, তার ভালবাসা আছে।
হ্যাঁ, শাহিদাকে আমি ভুলতে পারিনি। বাকি জীবনে ভুলতেও পারবনা। শাহিদা রবে আমার হৃদয়ের গহীনে।
২৪ বছরের প্রবাস জীবনের রাতগুলো কিভাবে কেটেছে আমি জানি। কতটা জোর করে আমাকে ঘুমোতে হয় আমি জানি। প্রতি রাতে একা একা বিড় বিড়ড় করে শাহিদাকে কি বলি আমি জানি।
আমার কেন যেন মনে হয় শাহিদা মরেনি, আছে কোথাও। আবার দেখা হবে আমার সাথে, আবার ভালবাসবে আমাকে।
আমার আর শাহিদার ভালবাসা মিথ্যে নয়, নিষ্পাপ দুটি হৃদয়ের নিষ্পাপ ভালবাসা। এই ভালবাসা হৃদয়েই বেঁচে থাকবে অনন্তকাল।
( সমাপ্ত)
(বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে)