নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও নওগাঁর-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (২৭ জুলাই) সকাল ৬টা ২০ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়ছিল ৫৪ বছর। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন এমপির বড় মেয়ে ইসরাত সুলতানা।
এর আগে গত ২৩ জুলাই শারীরিক সমস্যার জন্য রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানো হয়। তিনি লিভারে পানি জমাসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দুইদিন আগে থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। এ অবস্থায় আজ সকালে তার মৃত্যু হয়।
রাজনৈতিক জীবনে তিনি নওগাঁ-৬ আসন থেকে পর পর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্বজনরা জানান, এমপি ইসরাফিল আলম দীর্ঘদিন ধরে যক্ষ্মা রোগে ভুগছেন। এছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ও ফুসফুসের জটিল রোগে আক্রান্ত তিনি। ২০ জুন ইসরাফিল আলমের মা এসেদা রহমান মারা যান। পরদিন মায়ের জানাজায় অংশ নিয়ে দাফন সম্পন্ন করে ২২ জুন ঢাকায় ফিরে যান। এরপরই বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। ভর্তির পর থেকে ক্রমেই তার শরীরের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছিল। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা আরো জটিল অবস্থায় গেলে শনিবার দুপুরে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।
টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের জন্ম রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ঝিনা গ্রামে। তিতাস গ্যাস কোম্পানিতে মিটার রিডার হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন। তার রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু প্রয়াত আহসান উল্লাহ মাস্টার। তিনি ঢাকা মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি পুরোপুরি রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
মোঃ ইসরাফিল আলম নওগাঁ-৬ আসনে দীর্ঘ প্রায় ৩৬ বছর পর ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী মোঃ আলমগীর কবিরকে পরাজিত করে বিএনপির দুর্গ হিসেবে খ্যাত এই আসনটিতে বিজয়ী হন। ২০১৩ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইসরাফিল আলম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেন তিনি।