এখানে আপনার পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন দিন।

ঢাকা ২৬ এপ্রিল ২০২৪ শুক্রবার

ব্রেকিং

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি: বাংলাদেশর সকল জেলায় জেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পদে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহী প্রার্থীগণ নিউজ সাইটের যোগাযোগ অংশে প্রদত্ত ঠিকানায় (ফোন, ইমেইল) যোগাযোগ করুন।

মোঃ অপু মিয়া বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৩৩

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৩৩

৪৪ ৫০৯

শেয়ার:

এমভি অভিযান যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন, নিহত বেড়ে – ৪০

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী এমভি অভিযান নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন লেগে দদ্ধ হয়ে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লঞ্চ ও নদী থেকে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

News

৭৩ জনেরও বেশি যাত্রী দগ্ধ হয়েছে। এদেরকে ঝালকাঠি ও বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদেরকে স্থানীয় আশেপাশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর দপদপিয়া এলাকায় আসলে গতরাত ৩টার দিকে ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুন লাগে।

পরে লঞ্চটি সদর উপজেলার দিয়াকুল এলাকায় গিয়ে নদীর তীরে নোঙর করে। খবর পেয়ে ঝালকাঠির ফায়ার সার্ভিসেরকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। গদ্ধ যাত্রীদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করছেন।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানান, ঢাকা থেকে তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে বরগুনা যাচ্ছিল এমভি অভিযান নামে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ। রাতে ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুন লেগে দগ্ধ হয়ে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৬জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৭৩ জনেরও বেশি যাত্রী দগ্ধ হয় এবং মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৪০জন।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈনুল হক জানান, ভোর ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। যাত্রীদের উদ্ধারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাজ করছেন। দগ্ধ যাত্রীদের হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. আমির হোসেন বলেন, ২০০ শতের বেশী যাত্রী আহত হয়েছে। গুরুতর আহতদের প্রাথমিক চিকি’সা শেষে বরিশাল শেবাচিম হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আহত রুগীর স্বজন সূত্রে জানা যায়, আজ শুক্রবার অপর দিকে লঞ্চ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আজকে রুগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স সেবিকারা।

দুর্ঘটনায় খোঁজ মিলছে না উত্তরা মডেল হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী কৃষ্ণ প্রসাদের। হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরছেন তার চাচা শিশির কুমার ঘরামী। বৃহস্পতিবার ছোট ভাই প্রত্যয় হাওলাদার (৭) ও তার মা গীতা রানীকে (৩০) নিয়ে লঞ্চে যায় সে। দুজন সুস্থ থাকলেও খোঁজ মিলছে না তার।

শিশির কুমার ঘরামী বলেন, ‘ঢাকা থেকে ছুটিতে বেড়াতে যায় তারা। বরগুনা জেলার বামনা থানার বাটাজোরে গ্রামের উদ্দেশ্যে। দুর্ঘটনা যখন ঘটে তখন কৃষ্ণ প্রসাদ (১২) ওয়াশরুমে ছিল। আগুনের কারণে সে আর ফিরে আসতে পারেনি। তার খোঁজ করেও সন্ধান মেলেনি। বরিশাল সাগরদী হাসপাতালেও খুঁজেছি কিন্তু পাইনি।’

চাচা শিশির বলেন, ‘এখানে এসেও এখনো পায়নি তাকে। তার সন্ধানটা অন্তত জানতে চাই। বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে তাও জানি না।’

ছেলে হারিয়ে বাবা কান্নায় ভেঙ্গে পরে বলেন, আমি আমার ছেলেকে ঢাকা একটি মাদ্রাসায় পড়ার জন্য ভর্তি করেছিলাম। গত কালকে বড়ির উদ্দেশ্য অভিযান লঞ্চে উঠে আওয়ার পথে পরিবারের সাথে কথা হয়। হঠাৎ সকালে হুনি বরগুনার দিকে আওয়া লঞ্চে নাকি আগুন লাগেছে। আমার পোলাডার সাথে হাজার চেষ্টা কইরাও আর কতা কইতে পারিনি। খোঁজতে খোঁজতে সকাল থেকে সন্ধ্যা অইছে। কিন্তুু মোর পোলাডারে আর পাইলাম না!

ঘুরে ঘুরে আরো দেখা যায়, এরকম অনেক স্বজন হারিয়ে দিশেহারা পরিবার। সরকারের সহায়তা দিলে কি জীবন ফিরে পাওয়া যাবে!? তবে লঞ্চ দূর্ঘটনা থেকে বাঁচতে লঞ্চ কর্তৃপক্ষদের উপর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দ্ববি জানান সরকারের কাছে মৃত্যু ব্যাক্তিদের স্বজনরা।

বরগুনা জেলার এডিসি জেনারেল জালাল উদ্দীন বলেন, আমরা বরগুনা থেকে ঘটনাস্থল ঝালোকাঠিতে আসছি। ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশ্য ছেড়ে আসছিল অভিযান লঞ্চ টি হঠাৎ করে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলে। অনেকে নিজের জীবন বাঁচাতে নদীতে ঝাপিয়ে পড়ে। এবং অনেকে ঘটনা স্থলে মৃত্যু বরণ করে। আমরা সকল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করবো।

নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি জানান, একটি মর্মান্তিক লঞ্চ দূর্ঘটনা ঘটেছে! লঞ্চে আসা দূর্ঘটনার কবলে পড়া যাত্রীতের গুরুতর উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে এবং অনেককে ঘটনাস্থল ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এবং আমি খবর পেয়ে বরিশাল ও ঝালকাঠি হাসপাতালে গিয়ে তাদের খোঁজ খবর নিয়েছি। এবং অগ্নিসংযোগে পুড়ে যাওয়া লঞ্চটি পরিদর্শন করেছি।

নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে একজন যুগ্মসচিবকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে কোনো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আছে কি না, তা এখনই বলতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, যারা মারা গেছেন প্রত্যেকের পরিবারকে আমাদের তহবিল থেকে দেড় লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। আর আহতদের সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসা করা হবে।

এদিকে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ও নিহতদের স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তরের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


লঞ্চ দুর্ঘটনা

মন্তব্য করুন-

বাংলাদেশর সকল জেলায় জেলা প্রতিনিধি, উপজেলা প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পদে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে। আগ্রহী প্রার্থীগণ নিন্মোক্ত ঠিকানায় যোগাযোগ করুন।

নাম: আহসান হাবিব সোহেল
মোবাইল: ০১৭১২২৩১৩৯০
ইমেইল: doinikvoreraloi@gmail.com