কথায় আছে সাগরের পাড়ে দাড়ালে সমুদ্রের বিশালতায় নিজেকে খুব ক্ষুদ্র মনে হয়। সাগরের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য আর বিশালতা উপভোগ করতে সাগরপাড়ে যাওয়া সম্ভব না হলেও ঘুরে আসা যায় রাজশাহীর পদ্মাপাড়ে।
বরেন্দ্রভূমির গলার হার হয়ে যুগে যুগে শোভা বর্ধন করছে পদ্মা নদী ।নদীর তীর ঘেঁষে গোড়ে তোলা হয়েছে হাঁটার জন্য টাইলস বসানো সুদীর্ঘ রাস্তা। বসার জন্য আছে সুন্দর সুন্দর টেন্ট।তপ্ত দুপুরকে উপেক্ষা করে নানা বয়সী মানুষের আগমন ঘটে চিরচেনা এই পদ্মাপাড়ে। এখানে স্কুল কলেজ পড়ুয়া কিশোর-কিশোরী তরুণ -তরুণীদের সংখ্যায় বেশি। কি সকাল আর কি বিকাল, সময়টা তেমন মূল বিবেচ্য বিষয় নয়।একটু খানি ফাঁক পেলেই মন ছুটে চলে পদ্মাপাড়ে। সকালের চাইতে বিকেল সময়ে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যায়। বিনোদন প্রেমীরা ছুটে আসে পদ্মাপাড়ে স্নিগ্ধতার কোমল ছোঁয়া পেতে।এখানে কেউ আসে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, কেউ বন্ধুদের সাথে,আবার কেউ আসে প্রিয়জনকে নিয়ে মনোরম পরিবেশে পদ্মার হিমেল হাওয়া, কাশফুলের নরম ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে। নদীর মোহনায় যে পরিবেশ দেখা যায় তা অতুলনীয়। যেভাবে ক্ষণে ক্ষণে বদলে যেতে থাকে দৃশ্যপট তাতে উদ্ভাসিত হয়ে উঠে সৌন্দর্যের অপরুপ ছটা।প্রকৃতি যে কতবড় চিত্রকর, সেটা পলে পলে অনুভব করতে থাকে। তার তুলির আঁচড়ে খোলতাই হতে থাকে জগতের রুপমাধরী।চলতে থাকে আলো ছায়ার খেলা। দিনের বেলায়ও পদ্মা নদীর তীরে রৌদ্রউজ্জ্বল, সকালের মাধুর্য জৌলুস বেশ উপভোগ্য। যদিও কার্তিকে গাঁ বুলিয়ে দেওয়ার কথা মিঠে রোদের আমেজে অথচ রোদ্রের তীব্রতার কারনে নাস্তানাবুদ হতে হয়।তারপরও নদীর পাড় ঘেঁষে কাশফুলের নান্দনিক সমাহার মনের মধ্যে এনে দেয় শুভ্র পালকের ছোঁয়া। পদ্মাপাড়ের তীরে গড়ে উঠা সীমান্ত অবকাশ, সীমান্ত নোঙর নামের ক্যাফে ও রেস্তোরাঁ আছে।সেখান বসে অনেকে চা,কফি,ফাষ্ট ফুডে বিভিন্ন ধরনের খাবারের অর্ডার দিয়ে মেতে গল্পের আড্ডায়। গল্পে এতটাই মগ্ন হয়ে উঠে যে নীড়ে ফেরার কথা ভুলে যায়। সুশোভিত পার্কে গাছের নিচে রয়েছে চমৎকার বসার ব্যবস্হা।সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে দিনের আলো শেষ হতেই অন্ধকারে ফুটে ওঠে আলোর বর্ণময় ফুটকি । দূর থেকে মনে হয় যেন দিপালী উৎসব। নদীর পানিতে তার প্রতিচ্ছবি।কাঁপা কাঁপা রঙিন বিচ্ছুরণ। বইতে থাকে ঝরিঝিরি সুমিষ্ট হিমেল হাওয়া।অপরুপ সেই নৈসর্গিক দৃশ্য। কাঁধে কাঁধ ঠেকিয়ে নিভৃতে থাকেন কেউ কেউ।