হোমনায় রহস্যজন মৃত্যু

কুমিল্লার হোমনায় এক প্রবাসির স্ত্রী'র ভাড়া বাসায় মো. আলম (৪৩) নামে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার ভোর রাতে উপজেলার চৌরাস্তা সংলগ্ন আফাজ উদ্দিনের ৫তলা বিল্ডিং এর তলায় প্রবাসীর স্ত্রী রেহানা আক্তারের ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

ছবি: মো. আলম (৪৩)

খবর পেয়ে পুলিশ হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতন্তের জন্য কুমিল্লা মর্গে প্রেরণ করেন। 

পুলিশ ও চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে ধারণ করছে, এ্যালকোহল বা যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট খাওয়ার পর যৌন চাহিদা মেটাতে না পেরে জ্ঞান হারিয়ে (হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে) তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।

নিহত মো. আলম মিয়া হোমনা পূর্ব পাড়ার মো. আক্তার হোসেনের ছেলে ও ৩ সন্তানের জনক ছিলো। সে দাউদকান্দি উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে পিয়ন (এমএলএসএস) হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, হোমনা বদলহাজি বাড়ির মৃত তোতা মিয়ার মেয়ে রেহানা বেগম (২৬) স্বামী প্রবাসে থাকার সুবাধে হোমনা চৌরাস্তার মো. আফাজ উদ্দিনের ৫তলা বিল্ডিং এর ৩য় তলায় ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন।

মৃত আলম মিয়া প্রায়ই ওই বাসায় যাতায়ত করতো বলে স্থানীয়রা জানায়। প্রতিদিনের মত গতকাল রাতেও রেহানার বাসায় আলম প্রবেশ করে এবং সোয়া ৩টার দিকে সেখানেই অসুস্থ্য হয়ে পড়লে রেহেনা বেগম মো. রফিকুল ইসলাম নামে আলমের এক বন্ধুকে ডেকে তার সহযোগীতায় আলমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। মৃত্যুর ঘটনা জেনে হাসপাতালের রেজিস্টারে ভুল ঠিকানা লিখে রেহানা বেগম কৌশলে পালিয়ে যায়।  পরে আলমের বন্ধু রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে তার নাম ঠিকানা সনাক্ত করা হয় এবং পুলিশের নিকট খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

এলাকার অনেকে জানায়, রেহানা বেগমের সাথে একাধিক যুবকের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। হয়তো রেহানার অন্য বন্ধুরা তাকে কৌশলে খাবারের সাথে কিছু মিশিয়ে সেবন করানোর ফলে অথবা ভিন্ন কারনে মৃত্যু হতে পারে!

তবে রেহেনা বেগমের সাথে কোন রকমের যোগাযোগ করতে না পারায় তার বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।

নিহত আলমের বন্ধু মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আলম আমার বন্ধু ছিলো। তার সাথে ৮ টার দিকে দাওয়াতে যাওয়ার কথাছিলো। কিন্ত আমি যেতে পারি নাই। রাত সোয়া ৩ টার দিকে আলমের মোবাইল ফোন থেকে ফোন দিয়ে রেহেনা বেগম আমাকে জানায় আলম অসুস্থ্য। পরে আমি গিয়ে রেহেনার বাসা থেকে আলমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাহিদা সিকদার জানায়, হাসপাতালে আনার পূর্বেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে অতিরিক্ত এ্যালকোহল বা যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট সেবনের ফলে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। 

হোমনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল কায়েস আকন্দ জানায়, নিহত আলমের লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেয়া হয়েছে। এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। তবে রেহেনা বেগমকে ঘটনার পর থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে পেলেই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।